সিলেট নিউজ বিডি ডেস্কঃ শীতের এই সময়ে শরীর থেকে ক্লান্তি আর অবসাদ ঝেড়ে ফেলার মোক্ষম অস্ত্র ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম দেহ-মনকে যেমন চাঙা রাখে, শীতটাও করে উপভোগ্য। তাই নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। লিখেছেন লোপা চৌধুরী।
প্রতিদিন সকালে উঠে ঘুম চোখে দৌড়াতে ভালো না-ই লাগতে পারে। একবার যদি মনে বিরক্তি এসে যায়, তা হলে হাজারো মোটিভশনের বই পড়েও শেষ ফল জিরোই থেকে যাবে। তাই ব্যায়ামের ক্ষেত্রে চাই বৈচিত্র্য। ক্লান্তি, একঘেয়েমি, বিরক্তি নিমেষে উধাও হয়ে যাবে; বাড়তি পাওনা হিসেবে পাবেন ফুরফুরে মন চনমনে শরীর। ভালো থাকতে এই তো চাই। শীতে ব্যায়াম করার সময় সুতির ফুলহাতা টি-শার্ট পরা ভালো, সঙ্গে ট্রাউজার। ব্যায়ামের সময় কেডস পরে নিন। শরীর উষ্ণ রেখে ব্যায়ামের উপযোগী রাখবে এগুলো। ব্যায়ামাগারে আসার আগে শরীরে অলিভ অয়েল মেখে নিলে শরীর উষ্ণ হবে তাড়াতাড়ি। সঙ্গে জলের বোতল আর তোয়ালে। বোতলে অল্প চিনি মিশিয়ে নিতে পারেন। ব্যায়ামাগারে শারীরিক পরিশ্রমে শরীর থেকে যে ক্যালরি হারাবে, তার খানিকটা পুষিয়ে দেবে চিনি। আর এবার একগুচ্ছ নতুন ওয়ার্কয়াউট নিয়ে কিছু আলোচনা।
আউটডোর এক্সারসাইজ;
ট্রেডমিলে দৌড়াতে আপনার বেজায় অরুচি, ওয়েট ট্রেনিং করতে করতে ক্লান্ত? তা হলে আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি হতে পারে আউটডোর এক্সারসাইজ। জিম বা বাড়ির চার দেয়ালে বন্দি না থেকে বেরিয়ে পরুন। এই ছোট্ট বদলেই আপনার ক্যালরি বার্নকে বাড়িয়ে দিতে পারে প্রায় ৫%। সঙ্গে টেনশন, ফ্রাস্টেশন, আর ডিপ্রেশনও আপনাকে ছুঁতে পারবে না। হাইকিং, কায়াকিং বা সামান্য পার্ক বঞ্চে পুশ আপ বা যোগাসন, প্রকৃতিকেই নিজের জিম বানিয়ে নিতে পারেন। শরীর মন দুই-ই স্ফূর্তিতে থাকবে।
বুট ক্যাম্প ওয়ার্ক আউট:
নামটা নিশ্চয় চেনা চেনা লাগছে। লাগারই কথা। এখনকার সময়ের সবচেয়ে চর্চিত ফিটনেস প্রোগ্রামের নাম। হাই ইনটেনসিতি কার্ডিও ও স্ট্রেংথ এক্সারসাইজ এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে আপনার শারীরিক শক্তি ও সহ্যক্ষমতাকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ছুড়ে ফেলা যায়। ক্যালরি বার্ন হয় সাথে ফিটনেস লেভেলও বেড়ে যায়। হার্ট রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এক্সারসাইজ করাই বুট ক্যাম্প ওয়ার্কআউটের মূল কথা। পুশআপ, স্কোয়াট থ্রাস্ট, পাঞ্চেস, কিকস দিয়ে শুরু করুন। এক ঘণ্টার রুটিনে প্রায় ৬০০ ক্যালরি কমতে বাধ্য।
ফাংশনাল ফিটনেস:
আমাদের শরীর থেকে বড় এক্সারসাইজ মেশিন আর কিছুই নেই। এই ধারণাকে আরও দৃঢ় করে ফাংশনাল ফিটনেস। আমাদের শরীরের প্রতিটি মুভমেন্টকে যদি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় তাহলে দেখবেন প্রতিটি মূল মুভমেন্ট দেখা যায়—স্কোয়াট, লাঞ্জ,পুশ পুল ও রোটেট। এই ন্যাচারাল মুভমেন্টের ওপরই কাজ করে ফাংশনাল ফিটনেস সিস্টেম। জয়েন্ট স্টেবিলিটি ও মোবিলিটি ভালো করে। শরীর স্ফূর্তি চলে আসে। একটা মাসলগ্রুপের উপর ফোকাস না করে শরীরের সব অংশকে টার্গেট করে ফাংশনাল সিস্টেম। যারা সদ্য কোনো চোট আঘাত থেকে সেরে উঠেছেন তাদের জন্য দারুণ কাজ দেয় এই প্রোগ্রাম।
ঘরের ভেতরেই:
এক্সারসাইজ নিয়ে শতকরা ৯০ জনই বলেন, তারা বিভিন্ন জিমের সদস্য কিন্তু সত্যি করে কী জিমে যান। মাসে মাসে টাকা গুনে যাচ্ছেন কিন্তু উপস্থিতির খাতায় আপনার উপস্থিতি সব মিলিয়ে প্রথম কয়েক সপ্তাহ। এ রকম এক্সারসাইজ করলে যে ফল পাবেন তা আর নতুন করে বলতে হবে না। অতএব জিমের ওপর ভরসা করার চেয়ে বাড়িতে এক্সারসাইজ করতে পারেন। দামি কোনো এক্সারসাইজ যন্ত্রপাতি লাগবে না। বাড়ির দেয়াল ধরে উঠা-বসা করতে পারেন। পানির বোতল নিয়ে ওয়েট ট্রেনিং করতে পারেন।
খাওয়া দাওয়া:
সকালে ব্যায়ামাগারে যাওয়ার আগে দুটি কলা, সঙ্গে একটি রুটি রাখতে পারেন। ফিরে এসে চারটি কলা, দুটি শসা, দুটি রুটি, সঙ্গে লেবু। দুপুরে এক কাপ ভাত, মাছ ও সবজি ইচ্ছেমতো। রাতে রুটি চারটি, একটি গোল আলু বা মিষ্টি আলু আর সবজি। আর যারা ব্যায়ামাগারে আসেন স্বাস্থ্য ফেরাতে তাদের বেলায় ব্যায়ামাগারে ঢোকার আগে চারটি কলা, বড় রুটি দুটি। ফিরে এসে চারটি ডিমের সাদা অংশ, এক গ্লাস দুধ, সঙ্গে মুরগির মাংস ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম। দুপুরে এক কাপ ভাত, সবজি, মুরগির মাংস ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ও ডাল। রাতে এক কাপ ভাত, দুটি ডিমের সাদা অংশ, মুরগির মাংস ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম এবং এক গ্লাস দুধ।