সিলেট নিউজ বিডি ডেস্কঃ লকডাউন বিধি অমান্য করে নিজের সরকারি বাসভবনে গার্ডেন পার্টির আয়োজনের জেরে এবার পার্লামেন্টের নিজ দল কনজারভেটিভ (টোরি) পার্টির এমপিদের আস্থা ভোটের সম্মুখীন হতে হবে যুক্তরাজ্যের প্রেসিডেন্ট বরিস জনসনকে।
সোমবার সন্ধ্যার দিকে এ আস্থাভোট হবে বলে দলীয় এমপিদের নিশ্চিত করেছেন কনজারভেটিভ পার্টির এমপিদের পার্লামেন্ট ফোরাম ‘১৯২২ কমিটি’র চেয়ারম্যান গ্রাহাম ব্র্যাডি।যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট হাউস অব কমন্সের টোরি পার্টির এমপিদের উদ্দেশে দেওয়া এক লিখিত বার্তায় ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘দলের ১৫ শতাংশ এমপি কনজারভেটিভ পার্টির নেতার বিরুদ্ধে আস্থা ভোটের আবেদন করেছেন এবং দলের হাইকমান্ড সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। সোমবার (স্থানীয় সময়) সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত আটটার মধ্যে পার্লামেন্টে এই ভোট হবে।’
‘এমপিরা ভোট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা গণনা করা হবে এবং যথাসময়ে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।’
গত এপ্রিলেই যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল বরিস জনসনের বিরুদ্ধে আস্থা ভোটের ডাক দিয়েছিল। মে মাসে তাদের সঙ্গে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন পার্লামেন্টের কনজারভেটিভ পার্টির এমপিদের একাংশ।
পার্লামেন্টের এমপিদের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে সরে আসা (ব্রেক্সিট) বিষয়ক দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৯ সালের ৭ জুন পদত্যাগ করেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা টেরিজা মে। তার পদত্যাগের পর ওই বছরই দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হন বরিস জনসন।তার কয়েক মাস পর ২০২০ সালের মে মাসে বেশ কয়েকজন অতিথির সম্মানে লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে নিজের সরকারি বাসভবন পার্টির আয়োজন করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। করোনার প্রথম ঢেউ চলার কারণে যুক্তরাজ্যজুড়ে তখন লকডাউন চলছিল।
পার্টিতে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ইমেইলের মাধ্যমে। লকডাউনের মধ্যে আয়োজিত সেই পার্টিতে শতাধিক অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানোর পাশাপাশি সবাইকে যার যার মদ আনার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
গত জানুয়ারিতে ইমেইলটি ফাঁস হয় এবং তা থেকে জানা যায় ২০২০ সালের ২০ মে আয়োজন করা হয়েছিল সেই গার্ডেন পার্টির।
সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর পার্লামেন্টের বিরোধী দল লেবার পার্টির এমপিরা জনসনের পদত্যাগ দাবি করেছেন। দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যেও তার জনপ্রিয়তায় ব্যাপক ভাটা পড়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের দৈনিক পত্রিকা দ্য টাইমসের জন্য একটি জরিপ পরিচালনা করেছে দেশটির জনমত জরিপ প্রতিষ্ঠান জে এল পার্টনার্স। সেই জরিপে অংশগ্রহণকারীদেরকে বরিস জনসন সম্পর্কে অল্প কথায় কিছু লেখার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
প্রায় ২০০০ প্রাপ্তবয়স্ক ব্রিটিশ সেই জরিপে অংশ নেন এবং তাদের মধ্যে ৭২ শতাংশই নেতিবাচক মন্তব্য করেন; অধিকাংশই লেখেন, ‘জনসন মিথ্যুক’।
সম্প্রতি এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পুলিশ। সেখানে বলা হয়েছে, পার্টিতে মদ্যপান করে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে।
সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর বরিস জনসন নিজের গদি রক্ষা পার্লামেন্টে একাধিকবার দুঃখ প্রকাশ করেছেন, ক্ষমাও চেয়েছেন। তবে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে এ ব্যাপারে নিশ্চুপ আছেন তিনি।