ওয়ান ইলেভেনের স্মৃতিচারণা :অভিশপ্ত ১/১১

শামসুল ইসলাম মিলন: গত ১৪ মে ২০২০ ইং ১৩ বছর পূর্বে এই দিনে সিলেটে যৌথ বাহিনী আমরা ৪০ জনকে বিনা কারণে আটক করে। রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করার আরেক টি অপচেষ্টা ঘৃন্য ১/১১।সেই সময়ে ফখরুদ্দিন/মঈনুদ্দিন এর নেতৃত্বে তৎকালীন যে সরকারের উদ্ভব হয়েছিল তখন খালেদা/ইয়াজউদ্দিন সরকারের ধান্দাবাজিতে মানুষের দৈনন্দিন জীবন ক্রমাগত বিপদ সংকটাপন্ন হচ্ছিল। রাজনীতিতে সংকট জনক অবস্হার ক্রমাগত অবতারণা হতে চলছে। এমন সময় সাধারণ মানুষ ভেবে নিয়েছিল ফকরুদ্দিন সরকার তাদের দৈনন্দিন জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনবে ।মানুষের সামনে সাময়িক কিছু সুবিধার পায়তারা সাজিয়ে রেখে ভিন্ন মাত্রায় অপরাজনীতির কৌশল চালিয়ে যেতে থাকে তখন একে একে স্পষ্ট হতে থাকে তাদের ভিন্নরূপ ।

আমরা যারা ছাতলীগ করতাম অগ্রজদের হাঁটা পথে হেঁটে যেথে কখনও কুন্ঠাবোধ করতামনা ।জননেত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্য যাবেন চিকিৎসা নিতে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরা সাভাবিক কিন্তু বাঁধা হয়ে দাড়ায় ১/১১ সরকার ।নেত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি যেকোনো মূল্যে ফিরবেন তিনি ফিরলেন উচ্চ শিরে।নেত্রীর সাথে দেশে আসলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ তারা সিলেট এসে মাজার জিয়ারত শেষে ১৪ মে ২০০৭ তৎকালীন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর নিমন্ত্রন গ্রহন করতে তার বাড়ীতে অবস্হান নেন।

আমরা কজন তৎকালীন মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম ভাই সহ জিন্দাবাজার শফিউল আলম নাদেল ভাইয়ের অফিসে অবস্হান করছিলাম দুপুর পার হবার সময় সেলিম ভাই সহ শফিক ভাইয়ের দাওয়াতে গেলাম ।যথারিতি মেহমান আপ্যায়ন পর আমরা আহার সেরে বাংলা বাড়ীর দুতলার বেলকুনিতে অবস্হান করছিলাম সেখানে ছিলাম বর্তমান সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডঃ নাসির উদ্দিন খাঁন,সৈয়দ শামীম ভাই,প্রিন্স সদরুজ্জামান ভাই,হাবিবুর রহমান সেলিম ভাই,ইউসুফ আলী সহ কয়েক জন বেলকোনিতে দাড়িয়ে আছি আচমকা একজন জিন্স পেন্ট টি শার্ট পরা হাতে নোট প্যাড সিগারেট প্যাকেট,লাইটার উদ্বোতো ভাব সাব আমাদের বলছে সবাই নিচে নেমে এক জায়াগায় দাড়ান,তার নাম মেজর তারেক।আমরা নিচে নামলাম যারা এই বাড়ীতে ছিলাম সবাই জড়ো হলাম।সেদিন ওখানে ছিলেন যুক্তরাজ্য আ”লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধা সুলতান শরীফ,আবুল হাসেম,ছমরু মিয়া,এডঃ হাফিজুর রহমান চৌধুরী তবে তাদের বয়স ও অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে এ চার জন কে ছেড়ে আমাদের ৪০ জন কে— ওরা নিয়ে যায় সেখান থেকে আমরা চল্লিশ জন কে বাড়ীর বাহিরে নিয়ে আসলে দেখলাম চারদিকে সেনাবাহিনীর চৌকি,প্রত্যেকেই গাড়ীতে উঠলাম যারা ছিলাম সেই দিন নেতৃত্ব পর্যায়ের সকলেই প্রায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কর্মি-

কারান্তরির্যাতিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন–১।এডঃ মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, ২।জননেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী,৩।সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক,৪।মরহুম ফারুক চৌধুরী,৫।বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক,৬।শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল,৭।সৈয়দ সাহেদ রেজা,৮।সৈয়দ আবুল কাসেম,৯।সারওয়ার হোসেন,১০।এম এ রহিম,১১।এডঃ নাসির উদ্দিন খান,১২।বীরমুক্তিযোদ্ধা-শহীদ চৌধুরী,১৩।জগলু চৌধুরী,১৪ হাবিবুর রহমান সেলিম।১৫।প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী,১৬। সৈয়দ শামীম আহমদ,১৭।এটিএম সোয়েব,১৮।টিটু ওসমানী,১৯।এহিয়া আহমদ,২০।মোজাহিদুল ইসলাম সোহেল, ২১।আসাদুজ্জামান আসাদ,২২।আব্দুর রকিব সিকদার,২৩।কবিরুল ইসলাম কবির,২৪।সামসুল ইসলাম মিলন,২৫।অরুনোদয় পাল ঝলক,২৬।শফিকুল ইসলাম চৌধুরী টুনু,২৭।জহিরুল ইসলাম চৌধুরী মাছুম,২৮।,কামরুল ইসলাম খোকন,২৯।ইউছুপ আলী,৩০।সাইফুল আলম টিপু,৩১।সেলিম রেজা,৩২।মুহিবুর রহমান লাভলু,৩৩।অজয় দেব,৩৪।আরিজ আলী,৩৫।রিমন চৌধুরী,৩৬।সৈয়দ সাফকাত আজিজ,৩৭।শরীফ খান মনি,৩৮।মিজান খান,৩৯।তোরন মিয়া, ৪০।আবু সাঈদ চৌধুরী—-

সবাই কে প্রথমে থানার ভিতরে তার পর প্রিজন ভ্যানে করে কোর্ট চত্তর প্রদক্ষিন করে ভ্যান চলে কারাঘার গেইটে অতঃপর বাকি কার্য্যক্রম দেশদ্রোহী মামলা আটকাদেশ(ডিটেনশন)আটকাদেশের মেয়াদ বাড়ে এরকম চলতে থাকে।জেলের ভিতর নানান ধরণের ভ্রান্ততথ্য ডালপালা মেলতে চেষ্টা করে আমরা মুক্তির অপেক্ষায় উদ্গ্রীব ।জেলে থাকতেই নেত্রীকে গ্রেপতার করা হয় বুঝেনেই সহসা মুক্তি হচ্ছেনা ।অনেক চেনা অচেনা আতংকের মধ্যেও মনোবল ছিল এই বলে রাজনীতি করি জেল জুলুম থাকবেই।মাঝে মধ্যে জেলখানার ভিতরে সেনা সদস্যরা টহল দিতো এটা অনেকেরই দুঃচিন্তার কারণ ছিল।আমাদেরকে নিয়ে পরিবারের দুঃচিন্তা থাকাটা স্বাভাবিক কিন্তু কোর্ট কাচারি নিয়ে কখনো চিন্তা করতে হয়নি সার্বিক দ্বায়িত্ব পালন করেছিলেন শফিকুর রহমান চৌধুরী ।আশা নিরাশার মাঝে চলতে থাকে জেলবন্দী জীবন ।এরই মাঝে অনেক কিছুই বলা নাবলাতেই থেকে যায় ।রমজান মাস চলে আসে প্রথম সেহরী খাওয়ার অভিজ্ঞতা কখনো ভুলার নয়।অনেক কিছুই বাকী রয়ে যাচ্ছে প্রকাশ করতে ।দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস কারাভোগের পর আমরা সবাই এই রমজান মাসে মুক্তি পাই।

যা হোক যারাই ১/১১ তে নেত্রী দেশে ফেরার পর যারা জেল জুলুম সহ্য করেছেন ‌অনেকেই বিগত দিনে তাঁরা মূল্যায়ন পেয়েছেন বর্তমান সময়ে মূল্যায়ন পাচ্ছেন নেত্রী সিলেটের নেতা কর্মিদের মনের চাওয়া পাওয়ার বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন আওমীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলা সম্মেলনে তাহলো বাংলাদেশ আওয়ামীলী সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা সিলেটের ছাত্ররাজনীতির অহংকার জননেতা শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সিলেটের ছাত্র রাজনীতির আরেক নক্ষত্র জননেতা এডঃ নাসির উদ্দিন খাঁন ।এই সকল নেতৃবৃন্দ শত প্রতিকূলতার মধ্যেও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেত্রীত্বের প্রতি অকুন্ঠ সমর্তন ও আস্হা বিগত দিন থেকে আজ অবধি বজায় রেখে চলেছেন।তাদের নেতৃত্ব বিগত দিন থেকে আজ অবধি পরিক্ষীত ।

বিগত দিনগুলোতে তাদের সামনে যেসকল কর্মি আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে থেকেছে জেল জুলুম সহ্য করেছে তাদেরকে নিঃশ্চয় তাঁরা মনে রাখবেন ।কারন ষড়যন্ত্র যে কোন সময় হতে পারে আর তখন পরিক্ষীত কর্মিদেরই বেশী প্রয়োজন ।১/১১ এর মহা ব্যারিষ্টার আর গাড় ত্যারা মতিন সহ এর কুশীলবরা সময় বুঝে উকি দিয়ে আওয়াজ দেওয়ার চেষ্টা করে।
পরিক্ষীত নেতৃত্বের জয় হোক
জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ জীবি হোন।।
সকল ষড়যন্ত্র কারী নিপাত যাক
জয় বাংলা—জয় বঙ্গবন্ধু।

স্মৃতিচারণ: শামসুল ইসলাম মিলন, সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় কমিটি।