কেন মিয়ানমারে এই সেনা অভ্যুত্থান?

সিলেট নিউজ বিডি ডেস্কঃ অং সান সুচির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি(এনএলডি) মিয়ানমারের নির্বাচনে বিজয়ের পর সোমবারই দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের কথা ছিল । এদিনে নির্বাচনের পর পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন বসার কথা ছিল এবং তাতে নির্বাচনের ফল পূর্ণতা পেতো। সামরিক অভ্যুত্থানের পর, এখন আর তা হবে না।

সামরিক বাহিনী এখনো মিয়ানমারে সরকারের ওপর ব্যাপক প্রভাব রাখতে সক্ষম। কারণ, ২০০৮ সালে সামরিক শাসনের সময় যে বিতর্কিত সংবিধানটি তৈরি হয়েছিল, তাতে সামরিক বাহিনীকে পার্লামেন্টের এক চতুর্থাংশ আসন দেওয়া হয়। অন্যদিকে প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র এবং সীমান্ত বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণও তুলে দেওয়া হয় সামরিক বাহিনীর হাতে। সেই সংবিধান যতদিন বহাল আছে, ততদিন সামরিক বাহিনীর হাতেও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থেকে যাচ্ছে।

নভেম্বরের ওই নির্বাচনে এনএলডি ৮০ শতাংশেরও বেশি ভোট পায়। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ সত্বেও এ দলটি এখনও মিয়ানমারে বিপুলভাবে জনপ্রিয়। কিন্তু সামরিক বাহিনী ভোটের পর পরই জালিয়াাতির অভিযোগ তোলে। নভেম্বরের ভোটে সামরিক বাহিনী সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটের খুব সামান্য অংশই পেয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো নভেম্বরের নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের ফলে এনএলডি কি এই সংবিধান পরিবর্তনের ক্ষমতা পেয়ে যেতো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেমন সম্ভাবনা ছিল খুবই কম।

সাবেক সাংবাদিক এবং প্রযুক্তিবিদ আয়ে মিন থান্ট আভাস দিচ্ছেন, এর পেছনে হয়তো আরেকটা কারণ থাকতে পারে। সেটি হলো, নির্বাচনের এই ফলাফল সেনাবাহিনীকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। ‘তারা আশা করেনি যে তারা এভাবে হারবে।’ ইয়াঙ্গুন থেকে তিনি বলেন, ‘যেসব লোকের পরিবারের সদস্যরা সামরিক বাহিনীতে আছে, এমনকি তারাও তাদের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে।’ তবে এর চেয়েও বড় কিছু কারণও আছে বলে জানান আয়ে মিন থান্ট। তিনি বলেন, ‘আপনাকে বুঝতে হবে সামরিক বাহিনী মিয়ানমারে তাদের অবস্থানকে কীভাবে দেখে। আন্তর্জাতিক মিডিয়া অং সান সুচিকে দেশের ‘মা’ হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত। তবে সামরিক বাহিনী নিজেদের মনে করে তারাই এ দেশের ‘পিতা’।